কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় | BD TODAY RESULT

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় | BD TODAY RESULT


কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

ঘুম মানুষের জীবনের একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ। এটি আমাদের শরীর ও মনকে পুনর্জীবিত করে, এবং সারাদিনের কাজের চাপ ও স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয়। তবে বর্তমান যুগে অনেকেই ঘুমের সমস্যা, যেমন ইনসমনিয়া বা ঘুম কম হওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। বিভিন্ন কারণেই ঘুমের সমস্যা হতে পারে, যেমন মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপন, ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার ইত্যাদি। কিন্তু কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, যা অনেকেই জানেন না। এই পোস্টে, আমরা কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় পেছনে কোন ভিটামিনের অভাব কাজ করতে পারে তা আলোচনা করব এবং কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি সাধারণত আমাদের শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখে। কিন্তু গবেষণা বলছে, ভিটামিন ডি এর অভাবও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস সূর্যের আলো। যারা দিনের অধিকাংশ সময় বাড়িতে কাটান বা সূর্যের আলো কম পান, তাদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীরে মেলাটোনিন হরমোনের স্তর কমে যায়, যা ঘুমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপায়

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকতে হবে। এছাড়া, স্যালমন মাছ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ দুধ বা দই খাওয়া যেতে পারে।

ভিটামিন বি১২

ভিটামিন বি১২ আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে এবং রক্তের সেল তৈরি করে। এটি ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা পালন করে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ভিটামিন বি১২ এর অভাব হলে আমাদের শরীরে হরমোনাল ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষের মধ্যে ভিটামিন বি১২ এর অভাব বেশি দেখা যায়।

উপায়

ভিটামিন বি১২ এর অভাব পূরণ করতে রেড মিট, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, এবং সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যেতে পারে। যারা নিরামিষভোজী, তারা বিশেষ ভিটামিন বি১২ সম্পূরক গ্রহণ করতে পারেন।

ভিটামিন বি৬

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ভিটামিন বি৬ মস্তিষ্কে সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। সেরোটোনিন মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে এবং মেলাটোনিন ঘুমের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ভিটামিন বি৬ এর অভাব হলে আমাদের ঘুমের চক্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

উপায়

ভিটামিন বি৬ এর অভাব পূরণ করতে মাছ, মুরগির মাংস, আলু, এবং কলা খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, এবং অন্যান্য সবুজ শাকসবজিও ভালো উৎস।

ম্যাগনেসিয়াম

ম্যাগনেসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্র এবং পেশির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে শরীরে স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ বাড়তে পারে, যা ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে রিলাক্স করতে সাহায্য করে এবং শান্তিপূর্ণ ঘুমের জন্য এটি অপরিহার্য।

উপায়

ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে বাদাম, বিশেষ করে আমন্ড এবং কাজু, সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, দই, এবং কালো চকলেট। যারা ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিতে চান, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।

ক্যালসিয়াম

ক্যালসিয়াম শুধুমাত্র আমাদের হাড়কে শক্তিশালী করে না, এটি মেলাটোনিন উৎপাদনেও ভূমিকা রাখে, যা ঘুমের জন্য অপরিহার্য। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়  ক্যালসিয়ামের অভাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং ঘুম গভীর হয় না। বিশেষ করে যাদের দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্যে এলার্জি আছে, তাদের মধ্যে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে।

উপায়

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে দুধ, দই, চিজ, এবং সবুজ শাকসবজি যেমন ব্রকলি এবং ক্যাল। এছাড়া, অমেরিকি মাছে (স্যামন, সার্ডিন) ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি।

জিঙ্ক

জিঙ্ক একটি মিনারেল যা ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় জিঙ্কের অভাব হলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে এবং ঘুম গভীর হয় না। 

উপায়

জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে শেলফিশ, বিশেষ করে অয়েস্টার, রেড মিট, এবং বাদাম। এছাড়া, কিছু সবজি যেমন শিমের বিচি, মটরশুঁটি ইত্যাদি।

ফোলেট

ফোলেট বা ভিটামিন বি৯ ডিএনএ সংশ্লেষণ এবং কোষের বৃদ্ধি ও পুনরুজ্জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হরমোন উৎপাদনেও ভূমিকা রাখে, যা আমাদের ঘুমের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় ফোলেটের অভাব হলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

উপায়

ফোলেট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাকসবজি, যেমন পালং শাক, ব্রোকলি, এবং সাইট্রাস ফল যেমন কমলা, লেবু।

ঘুম কম হওয়ার সমস্যার সমাধান

যদি আপনি ঘুম কম হওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে প্রথমেই নিজের খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করলে শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকবে এবং ঘুমের সমস্যা কমে যাবে। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা নির্বাচিত করা।

সর্বশেষ

ঘুমের সমস্যার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, তবে ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব একটি অন্যতম কারণ হতে পারে।কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তার উপর আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে সঠিক পুষ্টির অন্তর্ভুক্তি ঘুমের গুণমান উন্নত করতে পারে। সুতরাং, সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোন ভিটামিনের অভাবে কী রোগ হয়?

মানসিক রোগের কারণ কী কী ?

Leave a Comment