হরিতকির উপকারিতা ও ঔষধি গুণাবলী | 2024



2024 হরিতকির উপকারিতা ও ঔষধি গুণাবলী

পরিচিতি ও বৈশিষ্ট্য

হরিতকী একটি ভেষজ উদ্ভিদ। হরিতকির উপকারিতা অনেক । ভারতবর্ষে বিভিন্ন স্থানে এটি পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার বনাঞ্চলে এ গাছ বেশি পাওয়া যায়।  হরিতকি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি ভেষজ ফল, যা ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের একটি। এই ফলটি প্রাচীনকাল থেকেই তার ভেষজ গুণাবলির জন্য পরিচিত। হরিতকি গাছ সাধারণত মাঝারি থেকে বৃহৎ আকারের হয়ে থাকে এবং উচ্চতায় প্রায় ২০-৩০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাছটির বাকল গাঢ় বাদামী রঙের এবং তাতে লম্বা ফাটল থাকে। পাতা লম্বাকৃতির এবং ৭-২০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। হরিতকির ফুল সাদা বা হলুদ রঙের এবং ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। ফলের ভেতর একটিমাত্র ভীষণ শক্ত বীজ থাকে। ফলটি ড্রপ আকৃতির, ঝুলন্ত এবং প্রায় ৪-৫ সেমি লম্বা, সবুজ রঙের হয়। এর কাঠ খুব শক্ত, ভারী এবং টেকসই, যা প্রাচীনকালে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতো।

পুষ্টিগুণ হরিতকির উপকারিতা

হরিতকির স্বাদ তিতা হলেও এতে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ এবং বিটা সাইটোস্টেবল, যা দেহের বিভিন্ন উপকারে আসে। হরিতকি অন্ত্র পরিষ্কার করার পাশাপাশি দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে, যা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক।

2024 বাংলাদেশি জামার ডিজাইন নিয়ে জানতে চাইলে লিংকে ক্লিক করুন
html

 হরিতকির উপকারিতা

হৃদরোগ ও হজমের সমস্যায় হরিতকির উপকারিতা হরিতকি ফলটি হৃদরোগ, বদহজম, আমাশয়, জন্ডিস এবং ঋতুস্রাবের ব্যথায় খাওয়ানো হয়। এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।

শ্বাসকষ্ট ও কাশির জন্য হরিতকির উপকারিতা প্রচুর আধুনিক ভেষজ চিকিৎসায় ফুঁসফুঁস ও শ্বাসনালী সম্পর্কিত রোগের জন্য হরিতকি বহুল ব্যবহৃত হয়। এটি কাশি ও শ্বাসকষ্টে বিশেষ কার্যকরী।

 রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ত্রিফলা, যা আমলকি, হরিতকি এবং বহেরার মিশ্রণ, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে বিশেষ কার্যকরী। এটি আধুনিক যে কোনো এ্যালোপ্যাথিক ঔষধের তুলনায় অনেক বেশি ফলপ্রসূ।

রেচক হিসেবে হরিতকির উপকারিতা কাঁচা হরিতকি রেচক হিসেবে কাজ করে, যা দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।

অর্শ রোগের ক্ষেত্রে হরিতকির উপকারিতা অর্শ রোগে হরিতকি চূর্ণ তিন থেকে পাঁচ গ্রাম পরিমাণ ঘোলের সঙ্গে একটু লবণ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। রক্তার্শে আখের গুড়ের সঙ্গে হরতকি গুঁড়া মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই সুফল পাওয়া যায়।

চোখের যত্নে হরিতকির উপকারিতা চোখের রোগের ক্ষেত্রে হরিতকি ছেঁচে পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি দিয়ে চোখ ধুলে আরাম পাওয়া যায়।

পিত্তের ব্যথায় হরিতকির উপকারিতা  পিত্তের ব্যথায় সামান্য গাওয়া ঘিয়ের সঙ্গে হরিতকি গুঁড়া সেবন করা যেতে পারে।

গলার স্বর: গলার স্বর বসে গেলে মুথা ও হরিতকি চূর্ণ মধুর সঙ্গে বেটে অথবা যোয়ানের সঙ্গে পান করলে স্বর স্বাভাবিক হয়।

পরজীবীনাশক ও স্নায়ুবিক শক্তিবর্ধক হিসেবে হরিতকির উপকারিতা হরিতকি দেহের পরজীবী ধ্বংস করে এবং স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করে। স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজন নিয়ন্ত্রণে হরতকি ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহারের পদ্ধতি

হরিতকি ফল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। কাঁচা ফল বা তার রস সরাসরি খাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, হরিতকি চূর্ণ, পাউডার বা ট্যাবলেট আকারে গ্রহণ করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে এটি ত্রিফলা মিশ্রণে ব্যবহৃত হয়, যা পানীয় আকারে গ্রহণ করা যাই । এই পানীয়টি কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা পালন করে । 

আপনারা হরিতকির সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে লিংকে ক্লিক করুন

সতর্কতা

যদিও হরিতকি প্রচুর উপকারী, তবে এটি সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত সেবন থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এটি শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভবতী নারী, ছোট বাচ্চা, এবং যাদের শারীরিক অবস্থা নাজুক বিশেষ করে নজরে রাখতে হয়, তাদের হরিতকি গ্রহণের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

হরিতকি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এর সঠিক ও নিয়মিত ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে।

Leave a Comment